Sunday 20 September 2020

কর বাড়ির পুজো

 


করোনা সুরের করালগ্রাসে আজস্তব্ধ ভুবনএক অনিশ্চয়তার মধ্যেডুবে আছেমানবসমাজ, চারিদিকে মৃত্যুর ঢক্কানিনাদ্এমতাবস্থায় সকল দুঃখকষ্ট ভুলিয়ে দিতে পারে একমাত্র উমাইঘরের মেয়ের ঘরে ফেরার সময় আসন্নআর এত প্রতিকুলতার মাঝেও অন্যান্যবারের মতো উমার আদর যত্নে কোন ও ত্রুটি থাকবেনা ৬৩ বি নিমতলা ঘাট স্ট্রিটের" করবাড়ির"পূজোয়১৯৬৯ সালে স্বর্গীয় প্রফুল্লকুমার করের হাত ধরে উমা প্রথম আসে নিমতলা ঘাট স্ট্রীটের কর বাড়িতেসেদিন থেকে আজ অবধিপ্রায় ৫২বছর একই রকম নিষ্ঠাও স্নেহের সঙ্গে মাতৃ আরাধনা হয়ে আসছে এই ভিটেতে

মহাপঞ্চমীরপুণ্যলগ্নেকুমোরটুলিথেকেমাতৃপ্রতিমাআসেকরবাড়িতেএরপর সারাদিন ধরে চলে ঠাকুর দালান সাজিয়ে তোলার কাজবাড়ির প্রত্যেক সদস্য আনন্দের সঙ্গে সাজানোর কাজে এগিয়ে আসে |সবশেষে দেবীর পরনে ওঠে সোনালী ডাকের সাজএর কোনও অন্যথা হয়নাএকে একে সকল অস্ত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় মহিষমর্দিনীদেবীও তারপুত্র কন্যাদের

এরপর মহাষষ্ঠীতে প্রথা মেনেই হয়দেবীর বোধন

আপনারা যারা অবগতনন এই করবাড়ির দূর্গাপূজা সম্বন্ধে, তাদের উদ্দশ্যে বলি, এই পূজোর একটা অন্যতম বিশেষত্ব হল, নবপত্রিকা স্নান। সপ্তমীর সকালবলতেই আমাদের চোখের সামনে যেছবিটা ভেসে ওঠে তাহলো ভোরের আলো ফোটার আগেই গঙ্গার ঘাটে নবপত্রিকা স্নানের দৃশ্যতবে এই কর বাড়ির নব পত্রিকা স্নান বাড়িতেই সারা হয় গঙ্গাজল এবং আর ওনানা উপাদান সহযোগেএই প্রথা এই পূজোরপ্রাণ পুরুষ স্বর্গীয় প্রফুল্ল কুমার করই কায়েম করে গেছেন

 

পূজোর প্রতিদিন অর্থাৎ ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত তিন রকম ভাজা, লুচি আর মিষ্টান্ন সহযোগে মাকে ভোগ উৎসর্গ করা হয়আর অষ্টমী নবমীর সন্ধিক্ষণে, অর্থাৎ সন্ধিপূজোর সময় এক মন চালে রবি শেষ নৈবেদ্য অর্পণ করা হয়। প্রতিদিন অত্যন্ত নিষ্ঠাও ধুমধামের সাথে সকল আচার অনুষ্ঠান পালন করে কর পরিবারশুধু পরিবারের লোকজনই নন, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনও পাড়াপ্রতিবেশী সকলে অংশ নেন করবাড়ির মাতৃ আরাধনায়। অষ্টমীপূজোর অঞ্জলি দিতে বহু মানুষ ভিড় জমান এই ঠাকুর দালানে। তবে এবছরের পরিস্থিতি মাথায় রেখে করোনা সতর্কমূলক সমস্ত রকম আয়োজন সেরে রাখা হচ্ছেতার সাথে অঞ্জলির সময় ভিড় এড়ানোর জন্য একসাথে বেশি সংখ্যক মানুষকে দালানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবেনা

 পাঁচদিন মহাধুমধামের পর আসে দশমীর বিদায়বেলা। বেজে ওঠে বিষাদের সানাই

এই দিন সকল কাজে অপরাজেয় হওয়ার উদ্দেশ্যে অপরাজিত গাছের পূজার চল রয়েছে কর বাড়িতেএরপর সূর্যাস্তের পরবিদায় ঢাকের বোলে মায়ের বিসর্জনহয় নিমতলা গঙ্গার ঘাটে

আবারও ঘরের মেয়ের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় দিন গোনে "করভিটে"তবে এবছর বিদায় বেলায় মায়েরকাছে একটা বিশেষ আবদার নিশ্চয়ই থাকবেমা যেন এই দুঃসময়কে কাটিয়ে ওঠার শক্তিও শুভ চেতনা আমাদের সকলকে দিয়ে যান

 








https://www.facebook.com/KAR-BARIR-PUJA-1565077046855788/

 

No comments:

Post a Comment